ইসলাম ডেস্ক || মিডিয়া জার্নাল
ধৈর্য: জীবনের অমূল্য গুণ
ধৈর্য হলো সৌভাগ্যের প্রতীক। ধৈর্যহীন মানুষকে দেখা যায় যেন আলোহীন মশালের মতো। এটি কোনো জন্মগত গুণ নয়; ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে যে কেউ নিজেকে ধৈর্যশীল ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। ধৈর্য এমন একটি গুণ, যা সর্বত্র সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয়। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বারবার ধৈর্যশীলদের প্রশংসা করেছেন। যেমন, আল্লাহ বলেন:
“আর তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো এবং নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবে না; ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।” (সুরা আনফাল, আয়াত ৪৬)
“আমরা তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করব ভয়, ক্ষুধা, ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে। আর ধৈর্যশীলদের জন্য সুখবর দাও।” (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৫)
ধৈর্যের চর্চার কিছু নির্দেশনা
-
আল্লাহর সর্বাধিকার স্বীকার করা: সব কিছু আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে। কোনো কাজের জন্য আল্লাহর ওপর প্রশ্ন করার অধিকার কারোর নেই।
-
নিশ্চিত তকদিরের ধারণা রাখা: আমাদের জীবনের প্রতিটি মুসিবত, সুখ–দুঃখ, ধন–সম্পদ, অসুস্থতা—all আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে। ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, মানুষ যতই চেষ্টা করুক, আল্লাহর লেখা ছাড়া কোনো ক্ষতি বা কল্যাণ সম্ভব নয়।
-
দুনিয়ায় বিপদ-আপদ অবশ্যম্ভাবী: পৃথিবী সকলের জন্য পরীক্ষা। বিপদ আসে কখনও গুনাহের প্রাপ্তি হ্রাসের জন্য, কখনও আমাদের নৈকট্য অর্জনের জন্য।
-
বিপদে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন: বিপদে ধৈর্য ধারণ করে বান্দা আল্লাহর কাছে ফিরে যায়। কোরআনে বলা হয়েছে:
“যারা বিপদ এলে বলেন, আমরা তো আল্লাহরই। আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।” (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৬)
-
মানুষের কল্যাণ–অকল্যাণ জানা আল্লাহর কর্তব্য: আমরা সবকিছু জানি না। কখনও বিপদ আসলেই তা আমাদের জন্য আশীর্বাদ হতে পারে।
-
দুনিয়া অস্থায়ী: ছোটখাটো কষ্টে ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য বড় প্রতিদান দেবেন। রাসুল (সা.) বলেছেন:
“দুনিয়া মুমিনের জন্য কয়েদখানা, কাফিরের জন্য জান্নাত।” (মুসলিম, হাদিস ৭৩০৭)
-
বিপদ মানুষের সক্ষমতার বাইরে নয়: আল্লাহ বলেন, “আমি কারো ওপর তার সামর্থ্যের বাইরে বোঝা চাপাই না।” (সুরা বাকারা, আয়াত ২৮৬)
-
মানুষের আচরণ সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা: অন্যদের ভুল বা রূঢ় আচরণকে ধৈর্য সহকারে বোঝার চেষ্টা করা আমাদের মানসিক শান্তি ও নৈতিক বিকাশে সহায়ক।
ধৈর্য শুধু পরীক্ষা ও বিপদের সময় নয়, প্রতিদিনের জীবনের ছোট বড় সমস্যার মোকাবেলাতেও অপরিহার্য। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে ধৈর্যশীল বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।



























