উপকূলীয় নদীর পানিতে লবনাক্ততার মাত্রা চরমে, হুমকিতে মানুষ পশু ও ফসল
খুলনা অফিস || মিডিয়া জার্নাল
উপকূলীয় জনপদের নদ নদীতে লবনাক্ততার মাত্রা বিপদজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। খুলনার দাকোপ উপজেলার পানখালী নদীতে সর্বোচ্চ ৩৭.০২ এবং সর্বনিম্ন ৭.৫ পিপিটি রেকর্ড হয়েছে। অপরদিকে কয়রা উপজেলার চাঁদআলী ঘাটে সর্বোচ্চ ৩০ এবং সর্বনিম্ন ৫.৬ মাত্রার লবনাক্ততা মিলেছে। পানিতে দশমিক ৭ থেকে দশমিক ৫ মাত্রার লবনাক্ততা ফসলের জন্য নিরাপদ বিবেচনা করা হয়। এ পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র মানুষের জন্য নিরাপদ ও সুপেয় পানি নয়, সবজি ফসল এবং গবাদি পশু পাখির জন্যও নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিতে হবে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) খুলনায় অনুষ্ঠিত ‘নিরাপদ পানি সংকট সমাধানে অ্যাডভোকেসি সভায় বিশেষজ্ঞরা এ অভিমত প্রকাশ করেন। উন্নয়ন সংস্থা জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস) এই সভার আয়োজন করে। সহযোগিতায় ছিল কনসার্ণ ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং কোইকা।
এনহেনসিং রিসিলিয়েন্স অফ কোস্টাল কমিউনিটিস (ইআরসিসি) প্রকল্পের আওতায় জেজেএস খুলনার দাকোপ ও কয়রা উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে সুপেয় পানি সরবরাহ কল্পে ২০২১ সাল থেকে কাজ করছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে খাপ খাইয়ে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনা এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরসিসি প্রকল্পের ম্যানেজার জিয়া আহমেদ। চেয়ারপার্সন ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দাকোপ উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মো: আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। মামুন অর রশিদের সঞ্চালনায় অ্যাডভোকেসি সভায় বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নজরুল ইসলাম, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো: আব্দুল করিম, মহিলা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুরাইয়া সিদ্দিকা, জেলা মৎস্য অফিসার মো: বদরুজ্জামান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো: মোস্তাক উদ্দিন, সহ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, সচিববৃন্দ।
সভায় বক্তারা বলেন, সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে উপকূলীয় জনপদে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে পানির ট্যাংক বিতরণ করা হচ্ছে। বৃষ্টির পানি ধরে রেখে সংরক্ষণের মাধ্যমে এই পানি পান সহ নানা কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তবে সংরক্ষিত এই পানি নিরাপদ কিনা তা পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়নি। এমনকি নিরাপদ ফসলের কথা বলা হলেও আগাম জাতের ফুলকপি, সীম, বেগুন উৎপাদনে ভয়াবহ মাত্রার বিষ প্রয়োগ করছেন কৃষক। বেগুন উৎপাদনে ১৬৩ বার এবং ফুলকপিতে অন্তত ১২ বার বীষ স্প্রে করতে হয় জানিয়ে বক্তারা বিষমুক্ত খাদ্য পণ্য উৎপাদনে গুরুত্ব আরোপ করেন।
অ্যাডভোকেসি সভায় ব ৃষ্টির পানি ধারণে ট্যাংকির পাশাপাশি ফিল্টার বিতরণ, অধিক মাত্রায় পুকুর সংস্কার ও খনন, অধিক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাংক বিতরণ, নিয়মিত ভাবে পানির গুণাগুণ পরীক্ষা এবং অকেজো পিএসএফ গুলো সচল করার সিদ্ধান্ত হয়।


















