খুলনা অফিস || মিডিয়া জার্নাল
পরিবর্তন আসতে পারে জামায়াতের প্রার্থীতায়। তালিকায় যোগ হতে পারে সংখ্যালঘু ও উপজাতি প্রার্থীর নাম। দলের শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যায়ে কথা বলে পাওয়া গেল এমনই আভাস। এক্ষেত্রে প্রথম চমক আসতে পারে খুলনা-১ আসনে। হিন্দু ভোটার অধ্যুষিত আসনটিতে একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রার্থীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে ভোট যুদ্ধে নামার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত।
গত কয়েকদিন ধরে জোর গুঞ্জন চলছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে দাকোপ-বটিয়াঘাটা থেকে জামায়াতের প্রার্থী হচ্ছেন কৃষ্ণ নন্দী। তিনি পাশ^বর্তী ডুমুরিয়া উপজেলার বাসিন্দা এবং সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। জামায়াতে ইসলামির ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু শাখার সভাপতির দায়িত্বে আছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংঘটিত করে জামায়াতের সভা সমাবেশে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করে নজর কেড়েছেন। ৩১ অক্টোবর ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের স্বাধীনতা চত্বরে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হিন্দু সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেছেন তিনি। যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। সম্মেলনে বক্তারা জামায়াতে ইসলামির রাজনীতির প্রশংসা করে বলেন, ৫৪ বছরে অনেক শাসন দেখেছি। হিন্দুরা শুধু বঞ্চনা আর নিস্পেশনের শিকার হয়েছি। আমরা আর সংখ্যালঘু পরিচয়ে বাঁচতে চাইনা। আমরা বাংলাদেশি পরিচয়ে ভয়হীন পরিবেশে জীবন কাটাতে চাই।
জানা গেছে, দাকোপ বটিয়াঘাটায় উপজেলা হিন্দু অধ্যুষিত জনপদ। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এখান থেকে বেশির ভাগ সময় হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রার্থীরাই এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ অঞ্চলে সক্রিয় বা জামায়াত ঘেষা কোন হিন্দু নেতা নেই। ফলে পাশের উপজেলা ডুমুরিয়া থেকে সম্প্রদায়ের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কৃষ্ণ নন্দীকে বিবেচনা করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে কৃষ্ণ নন্দী আমার দেশকে বলেন, সংগঠন থেকে আমাকে ঢাকায় ডেকেছিল। আমীর সাহেব এবং সেক্রেটারি জেনারেল কথা বলেছেন। নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। দল আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিলে আমি নির্বাচনের জন্য প্রস্তত। এখানে আমার কোন চাওয়া পাওয়ার নেই। দলের সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ২০০৩ সালে এক হাজার টাকা চাঁদা পরিশোধ করে জামায়াতের হিন্দু শাখার সদস্য হয়েছিলাম। দীর্ঘ সময়ে সদস্যদের দু:খ কষ্টে পাশে থেকেছি। দেড় বছর হয় ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু শাখার সভাপতির দায়িত্ব পাই।
জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আমার দেশকে বলেন, হিন্দু কমিউনিটির রিপ্রেজেন্ট করতে পারে, উপজাতিদের রিপ্রেজেন্ট করতে পারে- এমন অনেকে যোগাযোগ করছেন। খুলনা, কিশোরগঞ্জ সহ আরও কয়েকটি জেলা থেকে এমন যোগাযোগ হচ্ছে। খুলনা থেকে অনেকে কৃষ্ণ নন্দীর নাম বলছেন। আমীর সাহেব, আমি, আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। কিন্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।
গত ২০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী খুলনা-১ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩ হাজার ৫৪২ জন। গত ৯ ফেব্রæয়ারী খুলনার ৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষনা করে জামায়াত। খুলনা-১ আসনে তারা বটিয়াঘাটা উপজেলা আমীর মাওলানা শেখ মো: আবু ইউসুফকে প্রার্থী করেন। তিনি নিয়মিতভাবে প্রচারণা ও গণসংযোগ করছেন। এদিকে ৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এ সময় খুলনার ৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা হলেও খুলনা-১এ কাউকে মনোনীত করা হয়নি। তবে বিএনপির মনোনয়নের দাবিদার তিন প্রার্থী আমির এজাজ খান, জিয়াউর রহমান পাপুল ও পার্থ দেব মন্ডল রয়েছেন প্রচারণার দৌঁড়ে।























