ডেস্ক রিপোর্টার || ভয়েজ অফ জাস্টিস

অস্ট্রেলিয়ায় তিনজনকে বিষাক্ত মাশরুম খাইয়ে হত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত এরিন প্যাটারসনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ভিক্টোরিয়ার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ক্রিস্টোফার বিল এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, ৩৩ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে তিনি প্যারোলে মুক্তি পাবেন না।
৫০ বছর বয়সী প্যাটারসনকে গত জুলাইয়ে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে নিজের বাসায় পরিবারের সদস্যদের দুপুরের খাবারে আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বিফ ওয়েলিংটনের মধ্যে বিষাক্ত ‘ডেথ ক্যাপ’ মাশরুম মিশিয়ে দেন। এতে তাঁর স্বামীর মা–বাবা এবং খালা মারা যান। তবে খালু ইয়ান উইলকিনসন প্রাণে বেঁচে যান।
এই মামলাকে ‘মাশরুম হত্যাকাণ্ড’ নামে পরিচিত করা হয়। বিচার চলাকালে স্থানীয় আদালতে ভিড় জমিয়েছিলেন পডকাস্ট নির্মাতা, চলচ্চিত্রকর্মী ও নানা জায়গা থেকে আসা মানুষ। অস্ট্রেলিয়ার বাইরে নিউইয়র্ক থেকে নয়াদিল্লি পর্যন্ত ঘটনাটি আলোচনায় আসে।
রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, “আপনি ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর ভয়াবহ মানসিক আঘাত দিয়েছেন। কোনো অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। আপনার অপরাধ এত গুরুতর যে সর্বোচ্চ শাস্তি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।” তিনি জানান, ৩৩ বছর পর প্যাটারসন প্যারোলের যোগ্য হবেন, তখন তাঁর বয়স হবে ৮৩।
প্যাটারসনের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, ৩০ বছর পর মুক্তির সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ, সাজা ভোগের বড় অংশ তাঁকে একাকী কাটাতে হবে। তবে আদালত তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেন। এখন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের জন্য তাঁর হাতে ২৮ দিন সময় আছে।
সাজা ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বেঁচে যাওয়া অতিথি ইয়ান উইলকিনসন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এই কঠিন সময়ে যারা আমাদের পাশে থেকেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। সবাইকে বলব, একে অপরের প্রতি সদয় থাকুন।”
২০২৩ সালের ২৯ জুলাই প্যাটারসনের বাড়িতে আয়োজিত পারিবারিক দুপুরের খাবারেই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা। খাবার খাওয়ার পরপরই ডন, গেইল ও হিদার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সপ্তাহের মধ্যে মারা যান। প্যাটারসনের দাবি ছিল, ভুল করে তিনি খাবারে বিষাক্ত মাশরুম ব্যবহার করেছিলেন। তবে আদালত সেই যুক্তি গ্রহণ করেনি।
ডেথ ক্যাপ নামের এ মাশরুম সাধারণ খাওয়ার উপযোগী মাশরুমের মতো দেখতে হলেও এতে থাকা প্রাণঘাতী বিষ কয়েক দিনের মধ্যে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিকল করে দিতে পারে।

