খুলনা অফিস || মিডিয়া জার্নাল
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৩৫ টি আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন ঢাকায়। আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকেল ৫টায় বিভাগীয় বৈঠক শুরু হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্বয়ং তাদেরকে দিকনির্দেশনা দেবেন বলে নিশ্চিত করেছে দলীয় সূত্র। ইতোমধ্যে সবাইকে ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এদিকে খুলনার ৬টি নির্বাচনী আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে আমন্ত্রণ পাওয়া না পাওয়ার তালিকা নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বৈঠকে ডাক পাওয়াকে অনেকেই তাদের জন্য দলের গ্রিন সিগন্যাল মনে করছেন। কর্মীরা খোঁজ খবর নিচ্ছেন কোন আসনে কে কে ডাক পেয়েছে। এ নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক। ফোনে কথোপকথন চলছে একের সাথে অপরের। সৃষ্টি হচ্ছে বাদানুবাদ, বাক বিতন্ডা।
সম্ভাব্য প্রার্থীদেরকে ফোনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। জানতে চাইলে আমার দেশকে তিনি বলেন, আসলে যা মনে করা হচ্ছে বিষয়টি তেমন নয়। এটা প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক নয়, দলের দায়িত্বশীলদের নিয়ে বৈঠক। নির্বাচন আসন্ন এবং প্রতিটি আসনে অনেকেই মনোনয়ন চাচ্ছেন। জাতি নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং ধানের শীষ প্রতীক যিনি পাবেন, তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার ম্যাসেজ দেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ভূমিকা কি হবে তা বলবেন।
খুলনার কোন আসন থেকে কতোজন ডাক পেয়েছেন তা এখন মূল আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে নিশ্চিত নন কেউই। তবে কেন্দ্রের একটি সূত্র জানিয়েছে, খুলনা-১ আসন থেকে দুজন, খুলনা-২ আসন থেকে তিনজন, খুলনা-৩ আসন থেকে একজন, খুলনা-৪ আসন থেকে দুইজন, খুলনা-৫ আসন থেকে একজন এবং খুলনা-৬ আসন থেকে পাঁচজন ডাক পেয়েছেন। বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল খুলনা-৩ থেকে এবং সাবেক এমপি আলী আসগার লবী খুলনা-৫ থেকে একক ভাবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ৫ আগস্টের পর দলের পক্ষ থেকে প্রতিটি আসনে সার্ভে হয়েছে। সার্ভেতে যাদের নাম এসেছে সেখান থেকে শর্টলিস্ট করে সোমবারের মিটিংয়ে ডাকা হয়েছে। এখানে নমিনেশন আলোচ্য বিষয় নয়, দল যাকে প্রার্থী করবে তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানাবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বিএনপি খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি শফিকুল আলম মনা জানান, তিনি দলের খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের মাধ্যমে সভার নিমন্ত্রণ পেয়েছেন। রোববারই তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন। আমন্ত্রিতদেরকে দিকনির্দেশনা দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি কি বিষয়ে কথা বলবেন তা বৈঠক শুরু হলে বোঝা যাবে।
খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির সাবেক খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু আমন্ত্রণ পেয়েছেন এসএমএস’র মাধ্যমে। আমার দেশকে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় দফতর বিভাগ থেকে এসএমএস এর মাধ্যমে আমাকে মিটিংয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। আমি সোমবার সকালে রওনা হবো।
খুলনা-১ আসন থেকে জিয়াউর রহমান পাপুল এবং খুলনা-৪ আসনে পারভেজ মল্লিক সভায় আমন্ত্রণ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন।
খুলনা-৫ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী সাংবাদিক নেতা আনোয়ার আলদীন জানান, এই মুহুর্তে সভাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বিরুদ্ধে যেমন ষড়যন্ত্র চলছে, তেমিন বিএনপির বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এখন আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক তাকতে হবে, তেমনি ইস্পাত কঠিন ঐক্যও গড়ে তুলতে হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এলক্ষ্যে সভা ডেকেছেন বলে ধারণা করছি। বাকিটা আগামীকাল বোঝা যাবে।
খুলনা-৩ আসনে দীর্ঘদিন কাজ করলেও নিমন্ত্রণ পাননি মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তারিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি ২০০৮ সাল থেকে দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছি। রাজনীতির মাঠে ছিলাম। আমাকে কেন ডাকা হয়নি জানিনা। দায়িত্বশীলদের সাথে যোগাযোগ করেও সদুত্তর পাইনি।
একই ভাবে খুলনা-৫ আসনে প্রার্থীতার দাবিদার সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা শফি মোহাম্মদ খানকেও ডাকা হয়নি। বিকেলে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি এলাকায় গণসংযোগ করছিলাম। এখন ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। দলের মহাসচিব বলেছেন, সব প্রার্থীকেই মিটিংয়ে থাকার সুযোগ দেওয়া হবে। আগামীকালের বৈঠকে আমি থাকবো।



















