স্পোর্টস ডেস্ক || ভয়েজ অফ জাস্টিস

২০২৫ সালের এশিয়া কাপকে ঘিরে আবারও মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। তবে এবার দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন এতটাই তীব্র যে আয়োজক ভারত শেষ পর্যন্ত ভেন্যু সরিয়ে দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
কিন্তু ১৯৮৪ সালে পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। তখনো সম্পর্ক এতটা বৈরী হয়নি। সেই সময়েই শারজাহতে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম এশিয়া কাপ, যেখানে অংশ নেয় ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।
শারজাহর উন্মাদনা
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জেনারেল ম্যানেজার মাজার খান স্মৃতিচারণ করে জানান, ঘোষণার পর থেকেই টিকিটের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছিল। ভারত-পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটারদের পাশাপাশি বলিউডসহ নানা অঙ্গনের সেলিব্রিটিরা গ্যালারিতে হাজির ছিলেন। ভারতকে নেতৃত্ব দেন সুনীল গাভাস্কার, পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন জাহির আব্বাস এবং শ্রীলঙ্কার দায়িত্বে ছিলেন দুলীপ মেন্ডিস।
অদ্ভুত মিল হলো— সেই মেন্ডিসই এবারের আসরে ফিরছেন ওমান দলের কোচ হয়ে।
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের জন্ম
সংযুক্ত আরব আমিরাত কেবল প্রথম এশিয়া কাপ আয়োজনই করেনি, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এএসসি) গঠনের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিল সরাসরি। আব্দুল রহমান বুকাহতীরের উদ্যোগে ১৯৮৩ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর পরের বছরই মাঠে গড়ায় এশিয়া কাপ। মধ্যপ্রাচ্যে এটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসর।
ভারতের প্রথম শিরোপা
১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারতীয় দল দুর্দান্ত ফর্ম ধরে রাখে এশিয়া কাপে। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তারা হয়ে ওঠে আসরের প্রথম চ্যাম্পিয়ন। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সুরিন্দর খান্না ছিলেন সেই সাফল্যের নায়ক।
সেই সময়কার আরেক সদস্য দিলিপ ভেঙ্গসরকার স্মৃতিচারণ করে বলেন, “শারজাহতে খেলা ছিল অসাধারণ অভিজ্ঞতা। দর্শকে স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ, ভারত ও পাকিস্তানি প্রবাসীরা ব্যাপকভাবে হাজির ছিলেন। আমরা যখন শিরোপা জিতলাম, পরিবেশ ছিল বিদ্যুতায়িত।”
শারজাহর অবদান
পরে শারজাহ হয়ে ওঠে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম আকর্ষণীয় ভেন্যু। ক্রিকেটার্স বেনিফিট ফান্ড সিরিজ (সিবিএফএস) সহ অসংখ্য বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে এই মাঠ। ভেঙ্গসরকারের ভাষায়, “তখন ক্রিকেটে শারজাহই ছিল প্রধান ভরসা। এখন দুবাই ও আবুধাবিতেও আধুনিক স্টেডিয়াম আছে, তবে ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে শারজাহর অবদান অবিস্মরণীয়।

