ইসলাম ডেস্ক || ভয়েজ অফ জাস্টিস

কেয়ামতের আগে পৃথিবীতে নানা ধরনের ফিতনা-ফাসাদ, অন্যায় ও অবক্ষয় ছড়িয়ে পড়বে—এ কথা হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। সমাজে দেখা দেবে রক্তপাত, খুনাখুনি ও নৈরাজ্যের ঝড়। এমনকি এমন সময়ও আসবে, যখন হত্যাকারী জানবে না কেন সে হত্যা করছে, আর নিহত ব্যক্তিও বুঝতে পারবে না কেন তাকে হত্যা করা হলো। (মুসলিম, হাদিস ৭২৬৪)
খলিফা উসমান (রা.)-এর শাহাদাতের পর গৃহযুদ্ধ শুরু হলে বহু সাহাবি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কেউ ইজতেহাদ অনুযায়ী কোনো পক্ষ নিলেও অনেকেই কোনো দলে যোগ দেননি। যেমন ওসামা ইবনে যায়েদ (রা.) আলী (রা.)-কে বলেছিলেন—“আপনি যদি বাঘের থাবার সামনে পড়েন, তবুও আমি আপনার সঙ্গে থাকব। কিন্তু মুসলমানদের গৃহযুদ্ধে আমি অংশ নেব না।” (বুখারি, হাদিস ৭১১৩)
রাসূলুল্লাহ (সা.) এক হাদিসে সতর্ক করেছেন—ফিতনার সময়ে বসে থাকা দাঁড়িয়ে থাকার চেয়ে উত্তম, দাঁড়িয়ে থাকা চলাফেরা করার চেয়ে উত্তম, আর চলাফেরা করা দৌড়ানো থেকে উত্তম। অর্থাৎ যতটা সম্ভব ফিতনার আগুন থেকে দূরে থাকা উচিত। (বুখারি, হাদিস ৩৬০১)
হাদিস শরিফে মুসলমানদের পারস্পরিক সংঘাতের বিরুদ্ধে কঠিন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন—“মুসলমানকে গালি দেওয়া গুনাহ আর তাকে হত্যা করা কুফরি।” (বুখারি, হাদিস ৬০৪৪) আবার তিনি আরো বলেছেন—“যে ব্যক্তি মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলে, সে আমাদের দলের অন্তর্ভুক্ত নয়।” (বুখারি, হাদিস ৬৮৪৪)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে—রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সময় যত এগোবে, আমল কমে যাবে, কৃপণতা বাড়বে, ফিতনা প্রকাশ্য হয়ে উঠবে এবং ‘হারজ’ বৃদ্ধি পাবে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলে তিনি ব্যাখ্যা করেন—হারজ অর্থ হত্যাকাণ্ড। (বুখারি, হাদিস ৭০৬১)
মুসলমানদের করণীয় কী?
ফিতনার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেকে নিরাপদ রাখা, অকারণে বিরোধে না জড়ানো এবং অন্যায়-অবিচার থেকে দূরে থাকা। সত্য ও ন্যায়ের অনুসন্ধান অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে, তবে বিভাজন ও সংঘাতে জড়িয়ে পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
👉 তাই সংকট ও বিভ্রান্তির সময়ে একজন সচেতন মুসলমানের দায়িত্ব হলো আত্মরক্ষা, ধৈর্য ধারণ, এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা। মহান আল্লাহ আমাদের ফিতনা থেকে হেফাজত করুন।

